নিজস্ব সংবাদদাতা,কোচবিহার:মরা তোর্সা। বর্ষায় ফুলেফেঁপে উঠলেও সারা বছর শান্ত থাকে। এ নদীর নাম বয়ে চলে আপন ছন্দে। তবে নিঃশ্চুপ মরা তোর্সাকে এখন কার্যত ডাম্পিং গ্রাউন্ড বানিয়ে ফেলেছেন গ্রামবাসীরা। যথেচ্ছ হারে নদীতে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। প্লাস্টিক ভর্তি বড় বড় বস্তা ফেলা হচ্ছে নদীতে। হুঁশ নেই কারও।
উল্লেখ্য, কোচবিহার শহরাঞ্চল লাগোয়া প্রায় পনেরো কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে মরা তোর্সা। নদীর উপরে রয়েছে সেতু। সেই সেতুর নীচে নদী বুজে গিয়েছে প্লাস্টিক আর আবর্জনায়। শহরাঞ্চলের মানুষেরযেন এটাই ডাম্পিং গ্রাউন্ড হয়ে উঠেছে। মরা তোর্সা নদীটি কোচবিহার ২ ব্লকের পুণ্ডিবাড়ি এলাকা থেকে মূল তোর্সা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শাখা নদী হিসেবে কোচবিহার ১ ব্লকের গুটিয়াহাটি এলাকায় গিয়ে ফের মূল নদীতে মিশেছে। সারা বছর জল কম থাকায় মৃতপ্রায় নদীর নাম হয়েছে মরা তোর্সা। বছর দশেক আগে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে মরা তোর্সাকে ঘিরে প্রজেক্ট তৈরি করেছিন জেলা প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তবে বাস্তবে তা এখন বিশ বাহু জলে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই নদী আগে অনেকটাই সুন্দর ছিল, কিন্তু বিগত বেশ কয়েকবছর ধরে পার্শ্ববর্তী এলাকার অনেকেই বিশেষ করে বাবুরহাট এলাকার ব্যবসায়ীরা এখানে এসে নোংরা ফেলায়। অনেকবার তাদের বাধা দিতে গেলেও সেবিষয়ে তারা কোনরকম কর্ণপাত করে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। দ্রুত এই সমস্যার সমাধানের দাবী জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
পরিবেশ প্রেমী সুমন্ত সাহা বলেন, মরা তোর্সা নদীর উপরে লাগামহীন অত্যাচার চলছে। আবর্জনা, বস্তা বস্তা প্লাস্টিক ফেলা হচ্ছে। দূষণ ঠেকাতে এলাকার বাসিন্দাদের অনেক বোঝানো হয়েছে। তবে মানুষ সচেতন না হলে নদীকে বাঁচানো যাবে না।
যদিও এব্যাপারে,প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা বর্তমান কোচবিহার পুরসভার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পর্যটনের ভালো সুযোগ ছিল। পর্যটকরা নিরিবিলি পরিবেশের টানে আসত। তবে করোনার পর আমি মন্ত্রী না থাকার পরে সেই কাজ আর বাস্তবায়িত হয়নি। তবে গোটা বিষয় নিয়ে তিনি কোচবিহারের জেলা শাসকের সাথে কথা বলবেন বলে এদিন জানান। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, ওই এলাকার সাধারণ মানুষদের নদী নিয়ে আরো সচেতন হতে হবে। একই সাথে নদীর মাহাত্ম্য বুঝতে হবে, এবং সচেতন হতে হবে বলে দিন জানান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। এছাড়া তিনি জানান যদিও ওই এলাকাটি পৌরসভার মধ্যে নেই তবুও বিষয়টা তিনি সরজমিনে খতিয়ে দেখবেন।