নিজস্ব সংবাদদাতা: ২০২৬সালে বিধানসভা নির্বাচন এরাজ্যের। আর তার আগেই রাজবংশী ভাষা আকাদেমির চেয়ারম্যান পরিবর্তন করল রাজ্যের বর্তমান সরকার। দীর্ঘদিন এই পদে থাকা জিসিপিএ নেতা বংশীবদন বর্মনকে সরিয়ে তার জায়গায় স্থলাভিষিক্ত করা হলো বিজেপির প্রাক্তন কোচবিহার জেলা এসসি মোর্চার সভাপতি এবং বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নগেন্দ্র রায় ওরফে অনন্ত মহারাজের ঘনিষ্ঠ হরিহর দাসকে। এই খবর কোচবিহার জেলায় আসা মাত্রই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
বিভিন্ন সময় দেখা গেছে গ্রেটার আন্দোলনের অন্যতম মুখ বংশীবদন বর্মনের অনুগামীদের তৃণমূলের সভায় অংশ নিতে। আর অন্যদিকে, বিজেপি দলের যেকোনো সভায় হলুদ পতাকা নিয়ে হাজির হয়ে যেতেন এই গ্রেটার আন্দোলনের আরেক নেতা বর্তমানে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নগেন্দ্র রায় ওরফে অনন্ত মহারাজের অনুগামীদের।
হঠাৎ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই বংশীবদন বর্মনকে সরিয়ে তার জায়গায় কেন বিজেপি সাংসদ অনন্ত মহারাজের অনুগামীকে এই পদে বসানো হলো তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। তবে এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহারে এসে নীলকুঠি এলাকায় অনন্ত মহারাজের প্রাসাদে গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে কথা বলতে এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায় এই হরিহর দাসকে। তাহলে কি অনেক আগে থেকেই এই পরিকল্পনা নেওয়া শুরু হয়েছিল? তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
কে এই হরিহর দাস? এই প্রশ্নের উত্তরে জানা যায়, এই হরিহর দাসের বাড়ি কোচবিহার ২নং ব্লকের পুন্ডিবাড়ি যজ্ঞ নারায়ণের কুঠি এলাকায়। একসময় অধ্যাপনার সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। বর্তমানে কোচবিহার গোসাইরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূগোল শিক্ষক হিসেবে কর্মরত এই ব্যক্তি। রাজবংশীর সমাজের উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ এবং গবেষণা করে যাচ্ছেন হরিহর বাবু। প্রথম থেকেই অনন্ত মহারাজের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ তিনি। দীর্ঘদিন ভারতীয় জনতা পার্টির এসি মোর্চার কোচবিহার জেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। অবশ্য বর্তমানে কোন রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগ নেই তার বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন হরিহার দাস। তিনি বলেন, তাকে এই গুরু দায়িত্ব দেবার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছেন। এর পাশাপাশি রাজবংশী সমাজকেও এদিন শ্রদ্ধা জানান তিনি। আগামী দিনে সকলের আশীর্বাদ এবং সহযোগিতায় তিনি যেন এই গুরু দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে পারেন, তার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে বিজেপি কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ বর্মন এদিন বলেন, রাজবংশী ভাষা আকাদেমির চেয়ারম্যান কে হবেন, তা ঠিক করে রাজ্য সরকার। তবে হরিহর দাসকে অনেক আগেই বিজেপি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, সে এখন বিজেপির সাথে যুক্ত নন।
এই প্রসঙ্গে কোচবিহারের সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, এ ব্যাপারে তার আলাদা করে বলার কিছু নেই। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী অনেক বেশি সচেতন। ২০২৬সালে কোচবিহারের যে রাজনৈতিক সমীকরণ অনুযায়ী তিনি চিন্তা ভাবনা করেছেন। তারই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন ভাষা আকাদেমির যারা সদস্যরা আছেন, সকলে মিলেই কাজ করা হবে।
বংশী বদন বর্মনকে এই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এদিন সাংসদ বলেন, বংশীবাদন বর্মন রাজবংশী উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে আছেন। এক ব্যক্তির একাধিক পদ না থাকায় শ্রেয়। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি ভেবেই সম্পূর্ণ সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারিখ সিদ্ধান্ত মেনেই কাজ করা হবে।
