প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও নদীর তীব্র স্রোতে ভেসে যাওয়া প্রায় ১৫ দিনের এক মাদী হস্তি শাবককে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়া হল জলদাপাড়ায়। ঘটনাটি ঘটে গত ৫ অক্টোবর কার্শিয়ং মহকুমার মেচি নদীতে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় , সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ জুড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে নদীর প্রবল স্রোতে ভেসে যায় হস্তি শাবকটি। প্রথমে তা কার্শিয়ংয়ের তারাবাড়ি এলাকায় মায়ের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং পরে ভেসে যায় সীমান্ত লাগোয়া মণিরাম এলাকায়। সেখানে ভারত ও নেপালের স্থানীয় মানুষ এবং দুই দেশের প্রশাসনের যৌথ প্রচেষ্টায় নদী থেকে শাবকটিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

এরপর কার্শিয়ং বন বিভাগের উদ্যোগে মাকে খুঁজে শাবককে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। শাবককে নিয়ে যাওয়া হয় পানিঘাট্টা রেঞ্জের কোলাবাড়ি বিটের জঙ্গলে এবং পর্যবেক্ষণে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ নজরদারির পরও দলের কোনো হাতি তাকে কাছে টেনে নেয়নি। একাকী ঘুরে বেড়াতে থাকা বাচ্চা হাতিটির শারীরিক দুর্বলতা ও অল্প বয়স বিবেচনা করে ৮ অক্টোবর তাকে বিশেষ পরিচর্যার জন্য স্থানান্তর করা হয় জলদাপাড়া বন্যপ্রাণী বিভাগে। বর্তমানে শাবকটি রয়েছে জলদাপাড়ার হলং সেন্ট্রাল পিলখানায়। অভিজ্ঞ মাহুতরা তাকে দুধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে প্রতিদিনের যত্ন নিচ্ছে। পাশাপাশি বন বিভাগের পশুচিকিৎসক দল তার স্বাস্থ্য পরীক্ষাও চালাচ্ছেন নিয়মিত। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আপাতত শাবকটির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং চিকিৎসার প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে হস্তি শাবকটি । বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এই অসাধারণ সমন্বিত প্রচেষ্টার জন্য ভারত ও নেপালের প্রশাসনিক আধিকারিক এবং সাধারণ মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে বন দফতর। কার্শিয়ং ও জলদাপাড়া বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এই উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে বলে জানা যায় ।