প্রতি বর্ষাতেই পতিরাম জুড়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রতিটি পাড়ার জল নিষ্কাশনের। পাড়ায় পাড়ায় ডুবে যায় এলাকা থেকে রাস্তাঘাট। পতিরামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি জল নিষ্কাশনের জন্য গোটা পতিরাম জুড়ে একটা মাস্টার প্ল্যানের। কিন্তু গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই গোটা পতিরামের একাধিক পাড়ায় যেমন সমস্যা দেখা দিয়েছে, সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে পতিরাম কদমতলির রাজ্য সড়ক। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম কদমতলি এলাকায় অসম্পূর্ণ ড্রেন নির্মাণের জেরে বর্ষায় সৃষ্টি হয়েছে বন্যাসদৃশ পরিস্থিতি। অল্প বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ছে পতিরাম-ত্রিমোহিনী রাজ্য সড়ক। ফলে শুধু কদমতলি নয়, কুমারগঞ্জ ব্লকের বটুন এবং বালুরঘাট ব্লকের নাজিরপুর ও গোপালবাটি পঞ্চায়েতের হাজারো মানুষের যাতায়াতে বিপর্যয় নেমে এসেছে।
জানুয়ারি মাসে জেলা পরিষদের তরফে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৬০ মিটার দীর্ঘ একটি হাইড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পতিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের চিঠির ভিত্তিতে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। পঞ্চায়েতের যুক্তি, গোটা পতিরামের জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে চার কিলোমিটার দীর্ঘ ড্রেন নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বর্তমান ড্রেনের অবস্থান ভবিষ্যতে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, তাই ড্রেন আরও দূরে সরিয়ে বসানোর প্রয়োজন।
এই প্রশাসনিক সমন্বয়ের অভাবের খেসারত দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কদমতলির রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। আশেপাশের দোকান, বাড়িঘরে জল ঢুকে পড়ে। খোঁড়া ড্রেনের পাশে অপরিকল্পিতভাবে মাটি না রাখায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। হাঁটা-চলা তো দূরের কথা, যাতায়াতই হয়ে পড়েছে বিপজ্জনক। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের পর দিন এই সমস্যা চললেও প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে ড্রেন নির্মাণের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা স্পষ্ট করতে হবে। হয় বর্তমান কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে, নয়তো দ্রুত বিকল্প জলনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে হবে। স্থানীয় বিজেপি নেতা বিশ্ব সাহা জানান, “খোঁড়া ড্রেন পড়ে রয়েছে, মাটিগুলো কোথায় গেল? এই গাফিলতির জন্য এলাকায় আজ ভয়াবহ দুর্ভোগ।”
জেলাপরিষদ সদস্যা দীপা দাস মন্ডল বলেন, “আমরা কাজ শুরু করেছিলাম, জানুয়ারির শুরুতে শিলান্যাস হয়েছিল। খোঁড়াখুঁড়িও শুরু হয়।তারপর পঞ্চায়েতের অনুরোধে তা স্থগিত হয়ে রয়েছে।”
