গোটা দেশের পাশাপাশি শুক্রবার শিলিগুড়ি ইসকন মন্দিরে বিপুল উৎসাহ, ভক্তি ও জাঁকজমকের মধ্য দিয়ে পালিত হল প্রভু জগন্নাথ দেবের ৩৬তম রথযাত্রা উৎসব। শ্রীজগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা মহারানীর রথযাত্রা উপলক্ষে সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্তের ঢল নামে মন্দির প্রাঙ্গণে।
রথযাত্রার সূচনা করেন শিলিগুড়ির মাননীয় মেয়র গৌতম দেব, যিনি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও রথের পথে ঝাড়ু দিয়ে শুভ সূচনা করেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার এবং বিশিষ্ট সমাজসেবীরা—শ্রী রতন বিহানি, শ্রী দীপক আগরওয়াল, ডঃ জি.বি. দাস, শ্রী কমলেশ আগারওয়াল, শ্রী অনিল আগারওয়াল ও শ্রী পবন আগারওয়াল প্রমুখ। রথের দড়ি টানতে মন্দির প্রাঙ্গণ ও রথপথে উপচে পড়ে ভক্তের ভিড়। সম্পূর্ণ শোভাযাত্রাটি শিলিগুড়ি ইসকন মন্দির থেকে শুরু হয়ে সেভক রোড, ভেনাস মোড়, হাসপাতাল মোড়, হরেন মুখার্জি রোড, নজরুল সরণি সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ঘুরে পুনরায় ইসকন মন্দিরে এসে শেষ হয়।

রথযাত্রা উপলক্ষে পরিবেশ ও সমাজকল্যাণমূলক বার্তা ছড়িয়ে দিতে আয়োজক সংস্থা বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচিও গ্রহণ করে। এর মধ্যে ছিল “গাছ লাগাও, পরিবেশ বাঁচাও”, “সেভ ড্রাইভ, সেভ লাইফ” ও “নেশামুক্ত সমাজ গড়ে তুলুন”—এই বার্তাগুলির উপর বিশেষ আলোকপাত। ইসকনের এই রথযাত্রা শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠানই নয়, এটি একটি সামাজিক উদ্দীপনার উৎস। ১৯৬৭ সালে আমেরিকার সান ফ্রানসিসকো শহরে শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের উদ্যোগে প্রথম রথযাত্রা শুরু হয়েছিল, যা বর্তমানে বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে পালিত হয়। শিলিগুড়িতেও এই মহোৎসব ধুমধামে পালিত হয়ে আসছে। এই পবিত্র অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ইসকন শিলিগুড়ির অধ্যক্ষ শ্রীপাদ অখিলাত্মা প্রিয় দাস ব্রহ্মচারী।
জনসংযোগ আধিকারিক জানান, “এই মহাযজ্ঞ সফল করতে পুলিশ প্রশাসন, সংবাদমাধ্যম, এবং সর্বোপরি আপামর জনসাধারণের সহযোগিতা ও সমর্থনের জন্য আমরা আন্তরিক কৃতজ্ঞ।” আসন্ন ৫ই জুলাই অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র উল্টোরথ যাত্রা। রথটি ইসকন মোড় থেকে যাত্রা শুরু করে পুনরায় ইসকন মন্দিরে ফিরে আসবে।