বাংলাদেশ থেকে চোরা পথে ভারতে অনুপ্রবেশ করার পর প্রায় দেড় বছর দিল্লিতে বসবাস। তবে বাড়ি ফেরার পথে শেষ রক্ষা হলো না। বাংলাদেশ ফিরে যাওয়ার জন্য বুধবার রাতে তুফানগঞ্জ এক নম্বর ব্লকের বালাভূত সীমান্ত ঘেঁষা একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাংলাদেশী দুই মহিলা সহ এক শিশু। খবর পেয়ে সেই বাড়িতে হানা দেয় তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ। ঘটনায় দুই মহিলাসহ শিশুকে সেখান থেকে আটক করে পুলিশ। যদিও পুলিশের পৌঁছানোর আগেই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় ওই বাড়ির লোকজন। পুলিশে তরফে সিল করে দেওয়া হয়েছে গোটা বাড়ি। ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পরেছে গোটা তুফানগঞ্জ জুড়ে।

তুফানগঞ্জে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কান্নিধারা মনোজ কুমার জানিয়েছেন, “বাংলাদেশে যাওয়ার আগে একটি বাড়িতে দুজন মহিলা সহ শিশু আশ্রয় নিয়ে ছিল। অভিযান চালিয়ে সালমা খাতুন ও মনজিলা খাতুন নামে ওই দুই মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দুজনের বাড়ি বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায়। ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে”।
ভারত -বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা বালাভূত গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিকাংশে নেই কাঁটাতারের বেড়া। উন্মুক্তের সুযোগে সীমান্ত চোরাকারবারিরা সক্রিয় রয়েছে বলেই অভিযোগ। সীমান্ত দিয়ে গোরু সহ নানা ধরনের প্রসাধনী সামগ্রী বাংলাদেশে পাচারের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। একশ্রেণীর দালালের মাধ্যমে শেখান দিয়ে ভারতের অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ ঘটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। এই ঘটনা যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে সে বিষয়টি ফের একবার দেখিয়ে দিয়েছে।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর জানতে পেরেছে, ধৃত দুই মহিলা ছাড়াও একজন ব্যক্তি ও তার সন্তান বছর দেড়েক আগে অবৈধভাবে কাঁটাতার টপকে ভারতে এসেছিল । সেখান থেকে তারা দিল্লিতে চলে যায়। দেড় বছর দিল্লিতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেখানকার বাসা বাড়িতে কাজ করে আসছিল। পুনরায় তারা বাংলাদেশের ফেরার জন্য তুফানগঞ্জের বালাভূতে এক দালালের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল । এক একজন পুরুষ, দুই মহিলা ও এক শিশুকে বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য টাকার লেনদেন হয়ে গিয়েছিল । ঝড় বৃষ্টির সুযোগে গত মঙ্গলবার মঞ্জিরার স্বামীকে ওপার বাংলাদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয় । সুযোগ বুঝে দুই মহিলা ও শিশুটিকে কাঁটাতার টপকে পাঠানো হতো ওপারে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ঘটনার পর থেকেই ফেরার রয়েছে সেই অভিযুক্ত। গোটা বাড়ি সিল করে পুলিশের পক্ষ থেকে সেখানে বসানো হয়েছে পাহারা।
ধৃত বাংলাদেশী মহিলাদের দাবি , বছর দেড়েক আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছিলেন তারা। দিল্লিতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বাসা বাড়িতে কাজ করছিলেন। বাড়ি ফেরার জন্য বালাভূতে এক দালালের খোঁজ পান তারা। সেই বাড়িতেই আত্মীয়ের পরিচয় দিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল।