DIGITAL BANGLA NEWS

আপনার এলাকার খবর

ভেটাগুড়ির জোড়া খুনের ঘটনায় নাম জড়ালো তৃণমূলের

কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার ভেটাগুড়ি এলাকায় জোড়া খুনের ঘটনায় নাম জড়ালো তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সহ ৫জন তৃণমূল কর্মীর। চাঞ্চল্য দিনহাটার রাজনৈতিক মহলে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ দিনহাটার ভেটাগুড়ি ২নং গ্রাম পঞ্চায়েতের নগরমন্ডল বাজার সংলগ্ন উত্তর বালাডাঙ্গা এলাকায় ধাঁরালো অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু হয় স্থানীয় বাসিন্দা হাসানুর রহমান (৩৫)ও ইউসুফ মিঞা (৫৫) নামে দুই ব্যক্তির। প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হয়েছিল এই দুই ব্যক্তি নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে একে অপরকে হত্যা করেছে। কিন্তু মৃত হাসানুর রহমানের স্ত্রী সাহেরা বানু বিবির অভিযোগ, তার স্বামীকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। আর এই খুনের সাথে যুক্ত রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য জাকির হোসেন সহ তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত গফুর আলি, রাজু হোসেন, আয়নাল মিঞা এবং লালচাঁদ হোসেন। এদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনে বুধবার দিনহাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই নগরমন্ডল বাজার সংলগ্ন উত্তর বালাডাঙ্গা এলাকায় একে অপরের সাথে বচসায় জড়ান এই দুই ব্যক্তি। এরপর দুজন দুজনকেই ছুরি মারে বলে অভিযোগ। পরে স্থানীয়রা তা দেখতে পেয়ে ছুরিকাহত অবস্থায় উদ্ধার করে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। এখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে খবর পেয়ে দিনহাটা থানার পুলিশ প্রথমে হাসপাতালে যায়। পরে এখান থেকে দিনহাটা এসডিপিও ধীমান মিত্র ও দিনহাটা থানার আইসি জয়দীপ মোদকের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী নগর মন্ডল বাজার সংলগ্ন উত্তর বালাডাঙ্গা এলাকার ঘটনাস্থলে যান। সেখানে তারা সরেজমিনে এই জোড়া খুনের তদন্ত শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
মৃত হাসানুর রহমানের স্ত্রী সাহেরা বানু বিবি জানান, এদিন রাতে স্থানীয় যুবক লালচাঁদ হোসেন বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান তার স্বামী হাসানুরকে। এর কিছুক্ষণ পরেই তাকে পাশের বাড়ির একজন গিয়ে খবর দেয় যে তার স্বামীকে কে যেন ছুরি মেরেছে। তিনিও শোনামাত্র ছুটে গিয়ে দেখেন জমিতে পরে রয়েছেন তার স্বামী। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান তার মৃত্যু হয়েছে। তবে তার অভিযোগ, এরা নিজেরা লড়াই করে মারা যাননি। এদের মৃত্যুর পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন তিনি।
এদিন তিনি আরও বলেন, পুরনো শত্রুতার জেরেই এই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সহ তার বাকি সঙ্গীরা এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। এর আগে তার পরিবারের একজন নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে অভিযুক্ত স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য জাকির হোসেন সহ তার তিন সঙ্গী গফুর আলি, রাজু হোসেন, আয়নাল মিঞা। এই পুরনো শত্রুতার জেরেই স্থানীয় যুবক লালচাঁদ হোসেনকে কাজে লাগিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন তারা। হাসানুরের ওপর আক্রমণ ঠেকাতে গেলে তাদের হাতে খুন হতে হয় ইউসুফ মিঞাকে বলে অভিযোগ তার।
এপ্রসঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য জাকির হোসেন এদিন বলেন, যে দুজন মারা গিয়েছেন তারা দুজনেই জেল খাটা আসামি। এদের দুজনের মধ্যে কি সম্পর্ক ছিল, তা জানা নেই। এরা দুজনেই দুষ্কৃতি দুজন দুজনকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন এই পঞ্চায়েত সদস্য।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় ১২বছর আগে মাথাভাঙ্গায় একটি জুয়েলারির দোকানে ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিলেন ইউসুফ মিঞা ও হাসানুর রহমান। এরপর থেকে ইউসুফ বিচার বিভাগীয় হেফাজতে ছিলেন এবং হাসানুর মিয়া জামিন পান। জেল থেকে বের হয়ে ইউসুফ মিঞার স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও মহিলা রাজি না হওয়ায় ব্যর্থ হন হাসানির। শোনা যায়, সে সময় হাসানুর এই মহিলাকে মারধরও করেন।
তবে অভ্যাসগত অপরাধী হওয়ায় আবারও বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হন হাসানুর। গত ৫বছর তিনি বিচার বিভাগীয় হেফাজতে ছিলেন। ইউসুফের স্ত্রীকে কেন্দ্র করে হাসানুরের এমন কার্যকলাপের কারণে সংশোধনাগারে হাসানুর ও ইউসুফের মধ্যে শত্রুতা বেড়ে যায়। ৫মাস আগে দুজনেই ছাড়া পান জেল থেকে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে মদ্যপ অবস্থায় তাদের মধ্যে ঝগড়া এবং মারপিট হয়, রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যু হয় দুজনেরই। ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে।

শেয়ার করুন...

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Live TV

play-sharp-fill

নতুন খবর আবার পড়ুন

নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে উদ্যোগী হল কামাখ্যাগুড়ি বিদ্যুৎ দপ্তরের বিদ্যুৎ বন্টন বিভাগ

আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়া,

Read More »