“আমরা গরীব মানুষ। আমরা ভোট দিই। দিদি আমাদের কেন দেখবে না? দেখতে বাধ্য। না খেয়ে আমরা কি মরে যাব?” — এমনভাবেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন দক্ষিণ সুকান্তনগরের বাসিন্দারা। শনিবার বন্যাদুর্গতদের জন্য তিস্তা বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় অস্থায়ী আউটরিচ ও মেডিকেল ক্যাম্পে এমন দৃশ্যই ধরা পড়ল জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ সুকান্তনগর এলাকায়। বন্যার পর থেকে সরকারি ত্রাণ না পৌঁছানোয় দিনমজুর ও নিম্নবিত্ত বাসিন্দাদের ক্ষোভ যেন উথলে উঠল এই ক্যাম্প ঘিরেই। স্থানীয়দের দাবি, “খিচুড়ি ছাড়া আমরা কিছুই পাইনি এতদিন। ঘরবাড়ি ভেসে গেছে।

এখন এসে ক্যাম্প বসেছে। গত ৪ ঠা অক্টোবরের প্রবল বৃষ্টিপাতে তিস্তা, জলঢাকা-সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক নদী ফুলেফেঁপে ওঠে। তারই জেরে প্লাবিত হয় সদর ব্লকের দক্ষিণ সুকান্তনগর এলাকা। একাধিক বাড়িতে জল ঢোকে, ভেসে যায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। কিন্তু দুর্গতদের দাবি, দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও সরকারি ত্রাণ পৌঁছায়নি এলাকায়। এদিন আউটরিচ ক্যাম্পে উপস্থিত হয়ে মালতি বর্মন বলেন, “এতদিনে শুধু খাওয়ার জল পেয়েছি, অন্য কিছু পাইনি। একটা ত্রিপল পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। সরকারী কেউ আমাদের দেখতে আসেনি।”
অন্যদিকে বাসন্তী রায়ের অভিযোগ, “আমার ঘরবাড়ি সব জলে ভেসে গেছে। আজ প্রথম ক্যাম্প দেখতে পাচ্ছি। আগে কেউ আসে নি। আমরা গরীব মানুষ, সরকার যদি না দেখে তাহলে আমরা কোথায় যাব?” এই অভিযোগ ঘিরে এলাকায় কিছুক্ষণ উত্তেজনা ছড়ালেও পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।তবে অভিযোগ মানতে নারাজ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অসিত সরকার। তাঁর দাবি, “সরকারি উদ্যোগ শুরু হওয়ার আগেই আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে সাহায্যের চেষ্টা করেছি। ৫০ কেজি চাল ও ১ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলাম। অনেকেই রাজি হলেও, কেউ কেউ আবার রাজি হননি। তখন আমার বাড়িতেও জল ঢুকেছিল, তবু চেষ্টা করেছি যতটা পারি।” অসিতবাবুর আরও বক্তব্য, “এর আগেও এমন ক্যাম্প করা হয়েছিল। হয়তো অনেকেই জানতেন না, তাই ভুল বোঝাবুঝি থেকে অভিযোগ উঠেছে।”