কোচবিহারের অ্যাডভান্সড ইন্টিগ্রেটেড স্পোর্টস হাব নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করার দাবির পাশাপাশি নিউ কোচবিহার স্টেশন থেকে ব্যাঙ্গালোর ও ভেলোরগামী নতুন ট্রেন চালুর দাবিকে সামনে রেখে সোমবার নিউ কোচবিহার রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় যৌথভাবে অবস্থান-বিক্ষোভে শামিল হল সিপিআই(এম) খাগড়াবাড়ি ও চকচকা এরিয়া সমন্বয় কমিটি।

এদিনের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায়, বর্ষীয়ান পার্টি নেতা তারিণী রায় সহ সিপিআই(এম) নেতা ধনেশ্বর রায়, মনোজ কুমার দাস, মহিলা নেত্রী শিবানী পাল প্রমুখ। এই অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন মোজাম্মেল হক।
এদিন সিপিআই(এম) খাগড়াবাড়ি এরিয়া কমিটির সম্পাদক মনোজ কুমার দাস বলেন, অ্যাডভান্সড ইন্টিগ্রেটেড “স্পোর্টস হাব” নির্মাণের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ২০১৯সালের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার লোকসভা আসন থেকে জয়ী হওয়া সাংসদ তথা ভারত সরকারের তৎকালীন ক্রীড়া, যুব কল্যাণ ও স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। ২০২৪সালের মধ্যে এই স্পোর্টস হাব নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবার কথা ঘোষণা করা হলেও এই মুহূর্তে স্পোর্টস হাব নির্মাণের কাজ রয়েছে একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে। আর এই মুহূর্তে এই প্রকল্প কার্যত বিশ বাঁও জলে।
২০২২সালের ২১মে নিউ কোচবিহার রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় শিলান্যাস হয় এই অ্যাডভান্সড ইন্টিগ্রেটেড “স্পোর্টস হাব”এর। এই স্পোর্টস হাব তৈরির জন্য রেলের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কেন্দ্রীয় সরকারের ক্রীড়া দপ্তরের। এদিন রেলওয়ে দপ্তরের স্পোর্টস ডিরেক্টর প্রেম লোচাব এর সাথে সাই এর আধিকারিক শিব শর্মা এই চুক্তি বিনিময় করেন। ২৫একর জমিতে গড়ে উঠবে এই স্পোর্টস হাবটি বলে ঘোষণা হয়৷ এর জন্য প্রায় ২৫০কোটি টাকা ব্যয় করা হবে বলে ঘোষণা হয়৷ ভারত সরকারের তৎকালীন ক্রীড়া, যুব কল্যাণ ও স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক এবং রেল প্রতিমন্ত্রী দর্শনা জারদোশ এদিন ভিত্তিপ্রস্তরের আবরণ উন্মোচন করেন।
অ্যাথলেটিক্স সিন্থেটিক ট্র্যাক, ফুটবল মাঠ, হকি অ্যাস্ট্রট্রাফ, টেবিল টেনিস, লং টেনিস, মাল্টিপার্পাস হল, আর্চারি থেকে শুরু করে সুইমিংপুল, বক্সিং, ভলিবল, রেসলিং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে এই স্পোর্টস হাবে। এছাড়াও ৩০০ থেকে ৫০০বেডের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হোস্টেল থাকবে। যাঁরা অলিম্পিক থেকে শুরু করে প্যারা অলিম্পিক গেমস, এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমসের জন্য অনুশীলন করেন, তাঁরা এখানে থাকবেন। সেই সঙ্গে ফিজিওথেরাপি এবং স্পোর্টস ইনজুরির জন্য উন্নতমানের রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার থাকবে। এছাড়াও প্রতিটি স্পোর্টস ইভেন্টের জন্য ১০-২০ জন করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের কোচ এখানে থাকবেন। শিলান্যাসের প্রায় সাড়ে ৭মাস পর ২০২৩সালের জানুয়ারি মাসের ১৫তারিখ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ভূমি পূজন হয় এই স্পোর্টস হাবের। ভারত সরকারের তৎকালীন ক্রীড়া মন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমি পুজো অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই প্রকল্পের জন্য প্রথম ধাপে ৭৫কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করেন এবং বলেন ২০২৪সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে স্পোর্টস হাবের কাজ শেষ হয়ে যাবে এবং খেলাধুলার প্রশিক্ষণ ও যাবতীয় কর্মসূচী শুরু হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন ভারতীয় রেলের সঙ্গে ক্রীড়া মন্ত্রক যৌথ ভাবে এই প্রথম দেশের মধ্যে উত্তরবঙ্গে এই ধরনের প্রকল্প করছে। আধুনিক এই প্রকল্পে ১৫-২০ ধরনের খেলার বন্দোবস্ত থাকবে। ২০২৪সাল পেরিয়ে ২০২৫সালের জুন মাসের শেষেও এক চুলও এগোয়নি এই স্পোর্টস হাবের নির্মাণ কাজ। অবিলম্বে এই কাজ সম্পন্ন করার দাবি তোলা হচ্ছে এই অবস্থান বিক্ষোভ মঞ্চ থেকে।