স্ত্রীর তরফে ভরণপোষণের নোটিশ হাতে পেয়ে আত্মঘাতী হলেন এক যুবক। সোমবার উদ্ধার হয় ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ। তুফানগঞ্জ থানার অন্তর্গত নাককাটি গাছ গ্রাম পঞ্চায়েতের তালতলা এলাকার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম জামাল শেখ (৪০)।
মৃতদেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য কোচবিহার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করে শুরু হয়েছে তদন্ত।
জানা গেছে, তালতলার বাসিন্দা জামাল শেখের সঙ্গে আঠেরো বছর আগে দেখাশোনা করে বিয়ে হয় আলিপুরের চিকলিগুড়ির এক তরুনীর।

বর্তমানে তাদের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁদে পড়ে মানি মার্কেটিং কাজে যোগ দেয় ওই গৃহবধূ। শুরু থেকেই তা পছন্দ ছিল না শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। এই নিয়ে সংসারে অশান্তিও হয়। আচমকা দুই মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নেয় ওই বধূ। এরপর স্ত্রীকে ঘরে ফেরানোর শত চেষ্টা করো ব্যর্থ হয় স্বামী। স্ত্রীকে ফেরাতে তিনবার আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। এমনকি, গ্রামের কয়েকজন ওই গৃহবধুর বাপের বাড়িতে গেলে গৃহবধূ সে সাফ জানিয়ে দেয়, শুরু থেকেই তার স্বামীকে পছন্দ না। বাবা জোর করে বিয়ে দিয়েছে তাকে। তিনি আর সংসার করবেন না বলে জানান।
শেষ পর্যন্ত বছর দুয়েক আগে অসমের এক যুবতীর সঙ্গে ফের বিয়ে হয় ওই যুবকের। দিব্যি চলছিল তাদের সংসার। এরপর স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কথা জানতে পারেন প্রথম পক্ষের স্ত্রী। এরপরেই গত শনিবার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর তরফে ভরণপোষণের দাবিতে নোটিশ আসে জামালের কাছে। সেই নোটিশ হাতে পাওয়ার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিল ওই যুবক।
মৃতের বাবা জাহান মিঞা বলেন, প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ভরণপোষণের নোটিশ পাওয়ার পর থেকে ছেলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। মন থেকে বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। অনেকবার ওকে বুঝিয়েছি আমরা আইনিভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করব। শেষ পর্যন্ত সে মৃত্যুর পথ বেছে নিল।
মৃতের দাদা আব্দুল আলী বলেন, ভাইয়ের স্ত্রীকে ঘরে ফেরাতে আমরা গ্রামের কয়েকজন নিয়ে ভাইয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলাম। তখন আমাদের জানানো হয়, শুরু থেকেই স্বামীকে তাঁর পছন্দ না। বাবা জোর করে ওই বিয়ে দিয়েছে। সে আর সংসার করবেন না বলে জানান। এরপরে আইনিভাবে তাকে ঘরে ফেরাতে তিনবার নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি। এরপর বাধ্য হয়ে আমরা ভাইয়ের দ্বিতীয় বিয়ে দেই।