একদিকে উত্তরবঙ্গের আকাশ যেন ঝরে পড়ছে অবিরাম—প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গোটা অঞ্চল। অন্যদিকে, নাথুলায় পর্যটকরা আজ উপভোগ করলেন শীতের প্রথম তুষারপাত। একই দিনে প্রকৃতির দুই রূপ—বিপর্যয় আর সৌন্দর্য—দু’দিকেই ছড়িয়ে পড়েছে এই পার্বত্য উপত্যকায়।
উত্তরবঙ্গে গত কয়েকদিনের লাগাতার বর্ষণে নদীগুলোর জলস্তর বিপজ্জনকভাবে বেড়ে উঠেছে। তিস্তা, রায়ডাক, তোর্ষা, জলঢাকা—সব নদীই এখন উজান ধরা প্রবাহে উত্তাল। একাধিক এলাকায় ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে, বহু মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে ধস নেমে রাস্তাঘাট ও রেল যোগাযোগ কার্যত বিপর্যস্ত। প্রশাসন ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা টানা উদ্ধারকাজে ব্যস্ত।

অন্যদিকে, ঠিক সেই সময়েই নাথুলা পাসে নেমেছে মরসুমের প্রথম তুষারপাত। ভোর থেকেই পাহাড়ের গায়ে সাদা তুষারের আস্তরণে ঢাকা পড়েছে রাস্তা, ঘর, গাছপালা। হঠাৎ করেই বদলে গেছে দৃশ্যপট—চারপাশ যেন বরফের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। এই অপ্রত্যাশিত দৃশ্য উপভোগ করতে থাকা পর্যটকরা বলছেন, “একদিকে খবর শুনছি বন্যার, আর এখানে দাঁড়িয়ে দেখছি স্বপ্নের মতো তুষারপাত—প্রকৃতির খেয়াল সত্যিই আশ্চর্য।”
একদিকে যেখানে উত্তরবঙ্গের মানুষ লড়ছেন বন্যা ও ধসের মতো দুর্যোগের সঙ্গে, অন্যদিকে নাথুলা পরিণত হয়েছে তুষারময় স্বর্গে। এই দুই বিপরীত চিত্র যেন এক ফ্রেমে প্রকৃতির নির্মমতা ও মাধুর্য—দুটোকেই একসঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছে।
প্রকৃতির এই বৈপরীত্য আবারও মনে করিয়ে দিল, মানুষের সমস্ত প্রযুক্তি ও প্রস্তুতির মাঝেও প্রকৃতি নিজের গতিতেই চলে—কখনও কঠোর, কখনও কোমল।