আসুক গুলি, লাঠির ঘা, তবু দেব না তিনবিঘা।” এই স্লোগানেই সংগঠিত হয়েছিল তিনবিঘা অন্দোলন ৷ আজ বহুদিন পেরিয়ে গেছে। সেই তিনবিঘা আন্দোলনে শহিদদের ভুলতে পারেনি কেউ ৷ উল্লেখ 1992 সালের 26 জুন তিনবিঘা করিডর নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের চুক্তি কার্যকর করার দিন তিনবিঘা এলাকায় আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে শহিদ হন ক্ষিতেন অধিকারী এবং জিতেন রায় ৷ এই চুক্তির প্রতিবাদে সরব হয়েছিল মেখলিগঞ্জ থেকে সারা কোচবিহার জেলা৷ আজ 26জুন তিনবিঘা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ৷

প্রতিবছর 26 জুন পালন করা হয় তিনবিঘা শহিদ দিবস হিসাবে ৷ প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা শহিদ বেদীতে মাল্যদান করেন। তৃণমূলের মেখলিগঞ্জের বিধায়ক পরেশ চন্দ্র অধিকারী সকাল সকাল তিনবিঘায় পৌছান। অপরদিকে বিজেপির জলপাইগুড়ির জেলাসভাতি শ্যমল রায় সহ দলের সাধারণ সম্পাদক দধিরাম সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন। শুধু তাই নয় দেশের ভূখণ্ডের হস্তান্তরের প্রতিবাদে শহিদ পরিবারের সদস্যরাও আজ মাল্যদান করেন ৷
1974 সালের মে মাসে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি ও বাংলাদেশ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মুজিবর রহমানের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি হয়েছিল । তাকে মান্যতা দিয়েই 1992 সালের 26 জুন তিনবিঘা করিডর বাংলাদেশকে হস্তান্তর করতে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিমা রাও ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চুক্তি স্বাক্ষর হয় ৷ ভারতে মূল ভূখণ্ডে থাকা বাংলাদেশের দুটি গ্রাম দহগ্রাম ও অঙ্গারপোতায় যোগাযোগ করার জন্য তিনবিঘা করিডর বাংলাদেশকে হস্তান্তর করার জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরপর 1981 সালে শুরু হয় জমি জরিপের কাজ ৷ সেই সময় তিনবিঘা করিডর হস্তান্তর বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। বাংলাদেশকে তিনবিঘা করিডর হস্তান্তরের প্রতিবাদ আন্দোলনে প্রথম শহিদ হন কুচলিবারির বাসিন্দা সুধীর রায় ৷ এরপর 1992 সালের 26 জুন চুক্তি কার্যকর করার দিন তিনবিঘা এলাকায় আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহিদ হন ক্ষিতেন অধিকারী এবং জিতেন রায় ৷ এরপর থেকে আজকের এই দিনটিকে তিনবিঘা শহীদ দিবস হিসাবে পালন করা হয়।