উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ ব্লকের কাস্তরাই গ্রামে এক মর্মান্তিক দৃশ্য—গলায় তীর বিদ্ধ অবস্থায় দিন কয়েক ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল একটি পথ কুকুর। তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে প্রাণীটি সাহায্যের আশায় গ্রামের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরলেও অধিকাংশ মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন।
তবে ব্যতিক্রম ছিলেন গ্রামের এক গৃহবধূ সঙ্গীতা রায়। অবলার কান্না তিনি উপেক্ষা করতে পারেননি। পাশে পাননি পশু চিকিৎসা, কিন্তু মনোবল হারাননি। শেষমেশ তিনি ফোন করেন পশুপ্রেমী সংগঠন ‘উত্তর দিনাজপুর পিপল ফর এনিম্যালস’-এর দপ্তরে।

সংস্থার সদস্যরা ওই রাতেই বৃষ্টির মধ্যে পৌঁছে যান কুকুরটিকে খুঁজতে। পরদিন বিকেলে কুকুরটিকে দেখা মাত্র আবার ফোন করে কাতর অনুরোধ জানান সঙ্গীতা ও তাঁর স্বামী উৎপল রায়। সংগঠনের সম্পাদক গৌতম তান্তিয়ার নেতৃত্বে আবারও অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ছুটে যান কর্মীরা।
সেই গ্রামেই জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তীরটি বের করে কুকুরটির প্রাণ বাঁচান প্যারাভেট দেবাশীষ দাস, অনুস চক্রবর্তী ও কৌস্তভ চক্রবর্তী। গলার দু’পাশে ১০টি করে সেলাই পড়ে। দেওয়া হয় ওষুধ ও ইনজেকশন। কুকুরটি এখন আশঙ্কামুক্ত।
এই গোটা চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় যেসব ওষুধের প্রয়োজন ছিল, তা জোগাড় হয় সঙ্গীতা রায়ের লক্ষীর ভাণ্ডারের সঞ্চিত টাকায়। অবলা জীবের জন্য এমন মমতাময়ী পদক্ষেপে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছে পশুপ্রেমী সংস্থা।
পিপল ফর এনিম্যালস জানিয়েছে, সরকারি সহায়তা মিললে জেলার আরও প্রত্যন্ত এলাকায় এমন মানবিক কাজ আরও বিস্তৃতভাবে করা সম্ভব হবে।