গত ৩রা অক্টোবর ময়নাগুড়ি ব্লকের আমগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেদগারা এলাকার খাটোর বাড়ির বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দা বিমল রায়ের স্ত্রী কল্পনা রায় প্রসব যন্ত্রণায় ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হলে অবস্থার অবনতি হলে, পরিবারের লোকেরা তাকে সুচিকিৎসার জন্য জলপাইয়ের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করে। পরবর্তীতে কল্পনা রায় এর একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন, এতেই খুশি বাড়ির লোকজন। তারপর বাড়ির লোকজন ছুটি করে বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত হতে থাকে এমত অবস্থায় গত পাঁচই অক্টোবর ভোর বেলায় জলঢাকা নদীর বাঁধ ভেঙ্গে বিমল রায়ের বাড়িঘর টাকা-পয়সা সব জিনিসপত্র বন্যায় ভেসে যায়, কত ৫ই অক্টোবর বেলায় বারোটায় নিয়ে আসার কথা ছিল স্ত্রী কল্পনা রায়, এবং তার সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরবে। কিন্তু ভগবানের এমনই লীলা যে ভোরবেলায় বিমল বাবুর সবকিছু ভেসে যায় বন্যায়।

এমত অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়ে বিমল রায়ের পরিবার সহ বিমল বাবু। কিভাবে নার্সিংহোম থেকে বিল মিটিয়ে স্ত্রী এবং নবজাতক পুত্র সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরবেন, এই অবস্থার কথা বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে খবর দেখতে পায় জলপাইগুড়ি র ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় জানাজানি হয়ে যায় তাদের এই নার্সিংহোমে কল্পনারায় নামে ওই মহিলা সদ্যোজত শিশু নিয়ে ভর্তি আছেন ছুটি হওয়ার কথা ছিল সেদিনই। কিন্তু বিল না মেটালে ছুটি হবে কি করে, পরবর্তীতে ওই বেসরকারি নার্সিংহোমের ডাক্তারবাবু, মালিক পক্ষ, এবং নার্স আয়া সকলেই নিজেরাই তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে বিমল রায় স্ত্রী কল্পনার রায়ের নার্সিংহোমের বিল নেননি কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে কল্পনারায়ের পরিবারের সদস্যরা এবং স্বামী বিমল বাবু ধন্যবাদ জানিয়েছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে। কি বলে তাদের ধন্যবাদ জানাবেন ভাষা নেই এই অবস্থায়। পরবর্তীতে তাদের থালা-বাসন সহ জামাকাপড় খাওয়ার জিনিসপত্র তুলে দেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ এবং নার্সিংহোমের সকল কর্মীবৃন্দ। এলাকার বাসিন্দারা, তাদের পরিবারের সদস্যরা এই ধরনের নজিরবিহীন ঘটনা কোনদিন দেখেননি।