বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আজ শনিবার দশভুজা দেবীর বোধন। পুরাণ অনুসারে, দক্ষিণায়নে নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য এ বোধনের মাধ্যমে বন্দনা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সে অনুসারে ঢাকায় মণ্ডপে-মন্দিরে আজ পঞ্চমীতে সায়ংকাল তথা সন্ধ্যায় বন্দনা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যদিও মূল পূজার কার্যক্রম শুরু হবে আগামীকাল রবিবার মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে। বাংলার ঘরে ঘরে এখন উৎসবের আমেজ। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে সাজসজ্জার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।

প্রতিমা সাজানো, আলোকসজ্জা, ধূপ-ধুনো, ঢাক-ঢোল সব মিলিয়ে যেন এক ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মিলনমেলা। বোধন শব্দের অর্থ জাগরণ বা চৈতন্যপ্রাপ্ত। শরৎকালের দুর্গাপূজায় এ বোধন করার বিধান রয়েছে। বিভিন্ন পুরাণ অনুসারে ভগবান রামচন্দ্র শরৎকালে রাক্ষসরাজ রাবণকে বধের উদ্দেশ্যে দুর্গাপূজা করেন। তিনি অকালে এ বোধন করেন বলেই এটি অকালবোধন নামে খ্যাত। তবে বসন্তকালে চৈত্র মাসে যে দুর্গাপূজা বা বাসন্তীপূজা অনুষ্ঠিত হয়, তাতে বোধনের প্রয়োজন হয় না। সাধারণত দেবী দুর্গার বোধন হয় ষষ্ঠীর সন্ধ্যায়। কিন্তু কিছু বছর যেমন এবার পঞ্জিকার নিয়মে দেখা যাচ্ছে ষষ্ঠী তিথি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বেশ রাত থেকে শুরু হচ্ছে বা পরের দিন বেশিক্ষণ নেই।
তাই শাস্ত্র মতে যদি ষষ্ঠীর উপযুক্ত সন্ধিকাল না পাওয়া যায়, তবে পঞ্চমীর দিন সন্ধ্যায়ই বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস করতে হয়। অর্থাৎ এবার ষষ্ঠী তিথি পুরোপুরি সন্ধ্যায় মিলছে না। তাই নিয়ম মেনে পঞ্চমীর সন্ধ্যায় দেবী দুর্গার বোধন করা হবে। তিথির কারণে এমনটা হচ্ছে। আজ বোধন শেষে কাল রবিবার দুর্গা দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠী বিহিত পূজা।পাঁচ দিনের এ উৎসব শেষ হবে আগামী ২ অক্টোবর বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। এবার দেবী দুর্গার আগমন হবে গজে অর্থাৎ হাতির পিঠে চড়ে। আর দশমীতে দেবী মর্ত্যলোক ছাড়বেন দোলা বা পালকিতে চড়ে।
ঢাকায় এবার গতবারের তুলনায় সাতটি বেড়ে মোট ২৫৯টি মন্দির-মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর সারা বাংলাদেশে মোট মন্দির-মণ্ডপের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৫৫টি, যা গতবারের তুলনায় হাজারখানেকের বেশি। ঢাকা সহ সারা বাংলাদেশে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রত্যেক পূজা মণ্ডপে ও মন্দিরের সামনে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। সর্তক অবস্থায় রয়েছে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।