
শ্রাবণে চাঁদমনি পরিণত শিবতীর্থে: পাহাড় ছুঁয়ে পুণ্যের আরাধনা . শ্রাবণ মাসে চাঁদমনি শিবমন্দিরে শুরু হয়েছে ধর্মীয় উৎসবের এক বিশাল সমাবেশ। শিলিগুড়ির সংলগ্ন চাঁদমনি চা বাগানে অবস্থিত এই ঐতিহ্যবাহী মন্দিরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তদের ভিড় জমছে প্রতিদিন। পাহাড় ও চা-বাগানের মাঝে অবস্থিত এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এক গভীর সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় আবহ।

চলতি বছরের শ্রাবণ উৎসব ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে এবং তা চলবে ৯ আগস্ট পর্যন্ত। এই সময়ে শিলিগুড়ি ছাড়াও তরাই, ডুয়ার্স ও পাহাড় থেকে হাজারো পুণ্যার্থী এসে ভিড় জমাচ্ছেন মন্দির প্রাঙ্গণে। মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ভক্তদের নিরাপত্তা ও সুব্যবস্থার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। বসানো হয়েছে সিসিটিভিও।
মন্দির প্রাঙ্গণে রয়েছে একটি প্রাচীন পুকুর, যাকে ঘিরে প্রচলিত রয়েছে নানা অলৌকিক কাহিনি। বিশ্বাস, এই পুকুরের জলেই প্রথম শিবলিঙ্গের অভিষেক হয়েছিল। এমনকি এক সময় এই পুকুরে নথ পরা মাছও দেখা যেত বলে স্থানীয়দের দাবি। মন্দিরের পুরোহিত সরোজ কুমার মিশ্র বলেন, “আজও বহু ভক্ত পুকুরে স্নান করে পবিত্র জলে শিবলিঙ্গে জলার্পণ করেন। এটা শুধু ভক্তির বিষয় নয়, বিশ্বাস ও আত্মশুদ্ধির প্রতীক।”
চাঁদমনি মন্দিরকে অনেকে শক্তিপীঠ হিসেবেও মানেন। পুরাণ মতে, সতীর কপালের অংশ এখানেই পতিত হয়েছিল, তাই ‘চাঁদমনি’ নামের উৎপত্তিও এসেছে ‘চন্দ্র’ ও ‘মনি’ শব্দ থেকে। উৎসব চলাকালীন প্রতিদিনই বিশেষ ভোগের ব্যবস্থা থাকছে মন্দির প্রাঙ্গণে। মন্দির চত্বরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নিঃশব্দ পরিবেশ এবং ধর্মীয় আবহ মিলিয়ে শ্রাবণ মাসে চাঁদমনি শিবমন্দির হয়ে উঠেছে ভক্তি ও ঐতিহ্যের এক বিশেষ মিলনক্ষেত্র।