এবার উত্তর প্রদেশের নয়ডা জেলায় দিল্লি পুলিশের পরিচয় দেওয়া কয়েকজন ব্যক্তির হেনস্থার শিকার কোচবিহার জেলার শীতলকুচি ব্লকের লালবাজার এলাকার বাসিন্দা মমিন মিঞা। তার কাছ থেকে ১০হাজার টাকা নেওয়ার পাশাপাশি তাকে বেধড়ক মারধর করেছে, দিল্লি পুলিশের পরিচয় দেওয়া বেশ কয়েকজন ব্যক্তি বলে অভিযোগ।
বর্তমানে কোচবিহার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন তিনি।

এক ভাই, এক বোন এবং ৩জন সন্তানকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তরপ্রদেশে নয়ডা জেলায় নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন এই মমিন মিঞা এবং তার ভাই নূর হাসান মিঞা। জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতো রবিবার সকালে নিজের কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন এই মমিন মিঞা। তবে এদিন সময়ের একটু আগেই তিনি বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। হঠাৎই পুলিশের পোশাক পরা বেশ কয়েকজন তাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায় এবং তিনি বাংলাদেশী এটা স্বীকার করানোর জন্য জোর করতে থাকে এই পরিস্থিতিতে মমিন মিয়া মোবাইল মারফত তার ভাইকে জানায় যে দিল্লী পুলিশের পরিচয় দিয়ে কয়েকজন তাকে ধরে নিয়ে এসেছে, তাই তার বিভিন্ন পরিচয় পত্রের ছবি মোবাইলে পাঠানোর জন্য। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে এই পরিচয় পত্র দেখতে অস্বীকারও করে এই পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিরা তার কাছে রীতিমতো ৫০হাজার টাকা দাবি করতে থাকে। অবশেষে তাদেরকে ১০হাজার টাকা দেয় মমিন মিঞা। এরপর তাকে বেধড়ক মারধর করে ফেলে রাখা হয় দিল্লি-উত্তর প্রদেশ বর্ডার এলাকায় বলে জানান তার ভাই নুর হাসান মিঞা।
তিনি জানান, তার দাদাকে বেধরক মারধরের পাশাপাশি তাকে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলে রাখা হয়েছিল। এরপর তাকে উদ্ধার করে তারা সোজা নিউ কোচবিহারের উদ্দেশ্যে থাকা ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরে আসেন বুধবার। মমিন মিঞার পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় তাকে তারা ভর্তি করেন কোচবিহার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। বর্তমানে সঠিক ভাবে কথা বলার মত পরিস্থিতি নেই মমিন মিঞার।
এদিন চিকিৎসাধীন এই পরিযায়ী শ্রমিকের সাথে দেখা করে তার শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন। তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। কথা বলেন এই শ্রমিকের পরিবার পরিজনদের সাথেও এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ ব্যাপারে সরাসরি কাঠগড়ায় তোলেন দিল্লি পুলিশকে। দিল্লী পুলিশের এই বাংলা বিদ্বেষী মনোভাবের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে বাঙালিরা অন্য রাষ্ট্রের নাগরিক। এই অন্যায় কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।