শুক্রবার দিনহাটা শহরের সিপিআই(এম) দপ্তর প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে বেপরোয়া ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি পার্টি দপ্তরের দরজায় তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে। রবিবার সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় সহ সিপিআই(এম) তারাপদ বর্মন, প্রবীর পাল, অমিত দত্ত, মকসুদুল ইসলাম, শুভ্রালোক দাস, সাধন দেব প্রমুখ নেতৃত্বে পুনরুদ্ধার করা হলো দিনহাটা শহরের হাসপাতাল মোড়ে অবস্থিত এই সিপিআই(এম) কার্যালয়।
এদিন তালা ভেঙে এই পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার করার পাশাপাশি উত্তোলন করা হয় সিপিআইএম দলের রক্ত পতাকা। এই পতাকা উত্তোলন করেন জেলা সম্পাদক অনন্ত রায়। এরপর মিছিল করে দিনহাটা থানায় যান সিপিআই(এম) নেতা কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার মাথাভাঙ্গা শহরের থানাপাড়া মাঠে ডিওয়াইএফআই কোচবিহার জেলা ২০তম জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই উদয়ন গুহের বিরুদ্ধে তীর্জক মন্তব্য করেন ডি ওয়াই এফ আই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি। আর পরই
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মীনাক্ষী মুখার্জী সহ সিপিআই নেতৃত্বদের হুঁশিয়ারি দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। মীনাক্ষী মুখার্জি সহ সিপিআই(এম) শীর্ষ নেতৃত্বদের দিনহাটা এসে রাজনৈতিক কর্মসূচি করবার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ জানান মন্ত্রী।
অভিযোগ, এর পরই দিনহাটা শহরে শহরের সিপিআই(এম) পার্টি অফিসে বেপরোয়া আক্রমণ সহ এই পার্টি অফিসের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা।
এরপর শনিবার দিনহাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সিপিআই(এম) নেতা জয় চৌধুরী। দ্রুততার সাথে এই পার্টি অফিসের দুই গেটে যে তালা লাগানো আছে, সেই তালা খুলে দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান তিনি। পাশাপাশি দিনহাটার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এবং পার্টি দপ্তর প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয় পুলিশের কাছে। কিন্তু এরপরও পুলিশ প্রশাসন কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায়। এদিন নিজেদের উদ্যোগেই এই পার্টি অফিসের তালা ভেঙে অফিসটি পুনরুদ্ধার করলেন সিপিআই(এম) নেতৃত্ব।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, পরপর ৮বার আক্রমণ করা হলো এই পার্টি দপ্তরে। শুধু তাই নয়, ন্যাক্কারজনকভাবে সিপিআইএমের পতাকাকে অবমাননা করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহকে উদ্দেশ্য করে অনন্ত রায় বলেন, তিনি বর্তমানে মন্ত্রী, তিনি কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী নন, তার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিকরা যাতে স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারেন, তার উদ্যোগ গ্রহণ করা। কিন্তু দিনহাটা রাজ্যের মধ্যে ব্যতিক্রম। এখানে সন্ধ্যার পর গ্রামের মানুষ দরজা-জানলা বন্ধ করে দেযন। এখানে বোমা পিস্তল বন্দুক বিক্রি হয় এবং তৃণমূল সেগুলি ব্যবহার করে। এখানে গাঁজা আফিম সব চাষই হচ্ছে। খর্গ হস্তে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত পুলিশ প্রশাসন এবং রাজ্যের মন্ত্রীর। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের কোনরকম হেলদোল নেই। আসলে তারা বুঝতে পারছেন তাদের পায়ের তলার মাটি নেই। আর তাই এই নিন্দনীয় কাজের সাথে তারা যুক্ত হচ্ছেন। এদিন অনন্ত রায় বলেন, পুলিশকে তারা স্পষ্ট বলবেন, তারা যদি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে না পারেন, তাহলে প্রয়োজনে পুলিশের বিরুদ্ধেও মামলা করতে বাধ্য হবে সিপিআই(এম)।