একদিকে তিস্তার উত্তাল স্রোত, অন্যদিকে পাহাড়ের গা বেয়ে নামা বিপদের ছায়া—একসঙ্গে দুই দিক থেকে ধাক্কা খাচ্ছে বাংলা। টানা বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গিয়েছে জলে, আর উত্তরবঙ্গে ঘনিয়ে এসেছে ধসের আশঙ্কা।
তিস্তা যেন দুধর্ষ রূপ নিয়ে নেমে এসেছে পাহাড়ি গ্রামগুলোর দিকে। জল বেড়েই চলেছে। রবিঝোরা ও ২৯ মাইল অঞ্চলে জাতীয় সড়ক ১০-এর উপর দিয়ে বইছে নদীর ধারা। কালিম্পং-দার্জিলিং সংযোগকারী রাস্তা তিস্তার কাছে এসে থমকে গেছে—একেবারে জলের তলায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোমবার রাত থেকেই যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে, চালু হয়েছে বিকল্প রুটের পরামর্শ।

কিন্তু শুধু জল নয়, আরও বড় শঙ্কা পাহাড়ের বুকে। দিনের পর দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিতে আলগা হয়ে যাচ্ছে মাটি, আর ভূতত্ত্ববিদদের ভাষায়, “যে কোনও মুহূর্তে নেমে আসতে পারে ধস।” এই আশঙ্কা মাথায় রেখেই বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর শুরু করেছে গ্রামবাসীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস তেমন আশার আলো দেখাচ্ছে না। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, মালদা, দুই দিনাজপুর ও আলিপুরদুয়ারের কিছু অংশে মঙ্গলবার ও বুধবার হতে পারে ভারী বৃষ্টি, সঙ্গে বজ্রপাত ও ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া।
নদীর ধারে এবং ধসপ্রবণ এলাকায় বসবাসকারীদের ইতিমধ্যেই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পাহাড়মুখো পর্যটন আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশও জারি হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে উদ্ধারকারী দল—যেন কোনও বিপদ এলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
আবহাওয়ার এই অগ্নিপরীক্ষা কতদিন চলবে, কেউ জানে না। তবে সতর্কতা আর প্রস্তুতিই এখন রাজ্যের একমাত্র ভরসা।