অর্ণব পাল, মালদা:১৯ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করলেন স্বামী ! মাথাও মুড়ে ফেলেন স্বামী।গ্রামের মানুষদের মৎস্য মুখও করানো হয়।শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব।কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন স্বামী ? জানলে চমকে উঠবেন আপনিও।এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পরাশটলা গ্রামের মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,নিঃসন্তান বধূ দ্রৌপদী রায় (৩৫)।দীর্ঘ উনিশ বছরের সংসার জীবনের মায়া ছিন্ন করে গত ১৮ মার্চ প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে নতুন সংসার জীবন শুরু করেছেন স্ত্রী।স্বামী অচিন্ত রায় গভীর ভাবে মর্মাহত হয়ে পড়েছেন।স্ত্রীকে চিরতরে ভুলে যেতে এই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করেন তিনি।

অচিন্ত পেশায় রাজ মিস্ত্রি।নিঃসন্তান দম্পতি।দীর্ঘ উনিশ বছর আগে পার্শ্ববর্তী বরুই গ্রামে দ্রৌপদীর সঙ্গে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয় অচিন্তর।সাতপাকে বাঁধা পড়ার সময় অগ্নিকে সাক্ষী রেখে একসঙ্গে জীবন কাটানোর শপথ নিয়েছিলেন তারা।একসঙ্গে উনিশটা বছর কাটানোর পর অন্য প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যান স্ত্রী। ফেইসবুকে প্রেমিকের সঙ্গে রিলস বানিয়ে স্বামীকে দেখানো চেষ্টা করেন।এমনকি স্বামীর হোয়াটসঅ্যাপে রিলস শেয়ার করেন।এতে স্বামীর সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে, পরিবারের সম্মান নষ্ট হয়েছে।তাই স্ত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করে তার আত্মার শান্তির জন্য শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করেন।স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার হিন্দু রীতি অনুযায়ী শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।পুরোহিত মন্ত্র পাঠ করেন, গ্রামবাসীদের পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনদের জন্য খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন,আগামী দিনে যাতে গ্রামে এই ধরনের আর কোনও ঘটনা না ঘটে তাই এই কাজ।পরিবারের এক সদস্য আশালতা রায় জানিয়েছেন,আমাদের বাড়ির বধূ অন্য এক প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছে। তাই আমরা তাঁর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলাম। গ্রামে যাতে আর এই ধরনের কোনও ঘটনা না ঘটে তারই বার্তা দিয়েছি।

স্বামী অচিন্ত বলেন,পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল না।তবে সন্তান না হওয়ার একটা দুঃখ ছিল।রাজমিস্ত্রি করে যা ইনকাম করতাম সমস্তটাই স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে জমা রাখতাম। স্ত্রী গভীর রাত থেকে ফোনে কথা বলত।আমি অনেক শাসন করেছিলাম।শ্বশুরবাড়িতে জানিয়েছিলাম।এদিন আমি কাজ করতে বাইরে গিয়েছিলাম।সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখি স্ত্রী বাড়িতে নেই।সমস্ত নতুন কাপড়চোপড়, বিয়ের অলঙ্কার ও বন্ধন ব্যাঙ্কের চল্লিশ হাজার টাকা সহ আমার জীবনের সমস্ত ইনকাম নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে।থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি।এরপর প্রেমিকের সঙ্গে ফেইসবুকে রিলিস তৈরি করে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে আমাকে জানানোর চেষ্টা করেন।শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলাম।
