
বৃষ্টিতে জলমগ্ন শিলিগুড়ি ফুলবাড়ি ১নং গ্রাম পঞ্চায়েতের মাইকেল মধুসূদন কলোনি, পথ অবরোধে বাসিন্দারা।
এক ঘণ্টারও বেশি সময় পথ অবরোধ করে রেখে ক্ষোভ উগরে দিল ফুলবাড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাইকেল মধুসূদন কলোনির বাসিন্দারা। প্রবল বৃষ্টির জেরে জল ঢুকে পড়েছে একাধিক বাড়িতে। প্রশাসনের তরফে তৎপরতা নেই, প্রধানের ভূমিকা নিয়েও উঠছে গুরুতর প্রশ্ন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই কলোনির রাস্তাঘাট এবং ঘরবাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বারবার পঞ্চায়েত প্রধান সুনীতা রায় চক্রবর্তীকে জানানো হলেও, তিনি কোনও দায়িত্ব নেননি। উল্টে প্রধানের স্বামী রাজা চক্রবর্তীর বিতর্কিত মন্তব্যে আগুনে ঘি পড়ে। তিনি নাকি এলাকাবাসীকে বলেন, “আপনারা ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন, কাজ করবে পঞ্চায়েত। আমি কিছু করব না।”
এই অপমানজনক ও দায়সারা মনোভাবেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। রাস্তা অবরোধ করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তাঁরা। নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠে গেলেও ক্ষোভ এখনো প্রবল।

পঞ্চায়েত সদস্যা সুমি বিশ্বাসও প্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ফান্ড তো আমার বাড়িতে আসে না, আসে প্রধানের কাছে। অথচ তাকে ফোনে পাওয়া যায় না, সব সিদ্ধান্ত নেন তাঁর স্বামী।” তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, যদি স্বামীকেই সবকিছু সামলাতে হয়, তাহলে সুনীতা রায় চক্রবর্তী প্রধান হয়েছেন কেন?
এলাকাবাসীর স্পষ্ট দাবি, তারা একটি নির্বাচিত প্রধানকে দায়িত্ব নিতে দেখছেন না, বরং তাঁর স্বামী অঘোষিত ‘ছায়া প্রধান’-এর মতো ব্যবহার করছেন।
এদিকে প্রবল চাপে পড়ে অবশেষে রবিবার সকালে চারজন শ্রমিক পাঠিয়ে জল পরিষ্কারের কাজ শুরু করেন প্রধান। যদিও তাঁর বক্তব্য, “লিখিত অভিযোগ পেলে আমি অবশ্যই খতিয়ে দেখতাম।”
এই মন্তব্যেই পরিষ্কার, একটি জলমগ্ন এলাকায় মানুষের দুর্দশা সরাসরি দেখেও প্রধান কোনও পদক্ষেপ নেননি, কারণ অভিযোগ ‘লিখিত’ ছিল না। প্রশাসনিক উদাসীনতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং স্বজনপোষণের অভিযোগে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছেন সুনীতা রায় চক্রবর্তী।
এই ঘটনার পর স্পষ্ট – ফুলবাড়ি ১ নম্বর অঞ্চলের নেতৃত্বের অবিলম্বে মূল্যায়ন জরুরি, নাহলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।