তৃণমুলের গোষ্ঠী কোন্দল ফের প্রকাশ্যে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে শেষ ২১ শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভার মঞ্চে নিজের গড়েই মেজাজ হারালেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তাজমুল হোসেন।প্রস্তুতি সভার মঞ্চ থেকে সরাসরি তার পাশে বসা শাসক দলেরই জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খানকে আক্রমণ করলেন মন্ত্রী তাজমুল।
মন্ত্রীর নেতৃত্বে বিগত পঞ্চায়েতে ভোটে ধ্বস নেমে ছিল। আবার লোকসভা ভোটেও হেভিওয়েট প্রার্থী প্রসূন ব্যানার্জি সব থেকে কম ভোট পেয়ে ছিলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা থেকেই।এমনকি জেলা পরিষদের লড়াইতে হারতে হয়ে ছিল মন্ত্রীর ভাইকেও।

আর সব কিছুর পিছনেই ছিল দলের মধ্যে থাকা তাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী।যাদের অভিযোগ ছিল মন্ত্রী এবং তার ভাই এলাকায় বিভিন্ন ব্যাপারে দুর্নীতি করছে। আর এর জন্যই হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভায় শাসকদলের থেকে মুখ ফিরিয়েছে সাধারণ মানুষ।আর এরপর থেকেই বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে মন্ত্রীর কপালে বাড়ছে চিন্তার ভাঁজ। আর আজ ২১ শে জুলাই প্রস্তুতি সভায় সব শেষে বক্তব্য রাখতে উঠে টেনশনে মেজাজ হারিয়ে ফেললেন মন্ত্রী তাজমুল। দলের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল আবার প্রকাশ্যে চলে এল।
হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী তজমুল হোসেনের সঙ্গে জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খানের সংঘাত প্রকাশ্যে।অনুগামীদের মধ্যে বিবাদ ধস্তাধস্তি,হাতাহাতি।এই নিয়ে শোরগোল মালদায়।বিরোধীদের দাবি রতুয়ার পরে এবার হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভায় কে টিকিট পাবে তা নিয়ে কোন্দল।এখন টিকিট পাওয়া নিয়ে ওদের গোষ্ঠী কোন্দল চলবে।হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক অফিসের সদভাব ভবনে ওই সভার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রথমে সভার ভিতরে ও পরে বাইরেও দুপক্ষের অনুগামীদের মধ্যে বচসা ও তা ধ্বধ্বস্তিতে গড়ায়। বিধানসভা ভোটের আগে যা নিয়ে দলের অন্দরেই চর্চা শুরু হয়েছে।জেলাজুড়ে একের পর এক দলের দ্বন্দ্ব সামনে এসে পড়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন নেতৃত্ব।দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,এদিন সদভাব ভবনে বিধানসভা ভিত্তিক প্রস্তুতি সভায় মন্ত্রী ছাড়াও দুটি ব্লকের সমস্ত নেতারাই ছিলেন। ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক(এ) সভাপতি জিয়াউর রহমান, জেলা পরিষদ সদস্য মার্জিনা খাতুন, হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তাবারক হোসেন-সহ শাখা সংগঠনের নেতারাও। সেখানে শেষ বক্তা ছিলেন মন্ত্রী। সেখানেই মন্ত্রী বলেন,এখন নতুন নতুন নেতা উঠে আসছে।অনেকে নিজেকে বড় নেতা ভাবছে।বড় নেতা কীভাবে জেলা পরিষদের টিকিট পেয়েছিল তা জানি। প্রথমে নাম না করলেও পরে মন্ত্রী বলেন, আমি বুলবুলকে ভালোবাসি। কাউকে তোয়াক্কা না করলেও বুলবুলকে করি। এরপরেই বুলবুল বলেন,আমাকে দুমিনিট বলতে দিতে হবে। আমি উত্তরে কিছু বলতে চাই। তখন মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলেন, মন্ত্রী তো কারও নাম করেননি। তাহলে আবার বলার কি আছে। এরপরেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন বুলবুল অনুগামীরা। ভবনেই প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে বাইরেও দুপক্ষের অনুগামীরা তর্কাতর্কি ও ধ্বস্তাধ্বস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। মন্ত্রী অবশ্য পরে দাবি করেন, তেমন কিছুই হয়নি। সব মিটে গিয়েছে।
জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খান বলেন, এই ঘটনার নায্য বিচার চাইছি পার্টির কাছে। তার ভুল হলে পার্টি থেকে পদত্যাগ করবেন বলেও জানান তিনি।
তৃণমূল নেতা শুভময় বসু বলেন মতান্তর হয়েছে, এটা হওয়া উচিত নয় বলেও জানান তিনি।
বিজেপি নেতা অম্লান ভাদুরি বলেন, তৃনমুলে অনিশ্চয়তা চলছে ৷ তৃনমুলে গোষ্ঠী কোন্দল ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ৷