কোচবিহার শুট আউট কান্ডে দুজনকে গ্রেপ্তার করলো কোচবিহার পুন্ডিবাড়ি থানার পুলিশ শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা জানালেন কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। তিনি জানান ধৃত দুজনের মধ্যে একজনের নাম দীপঙ্কর রায়, আরেক জনের নাম উত্তম গুপ্ত। আরও দুজনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। তিনি জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। পুরনো আক্রোশের জেরেই এই ঘটনা বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। তবে এর সাথে কোন রাজনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে কিনা তার খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে এদিন জানান পুলিশ সুপার।

কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কোচবিহার ২নং ব্লকের ঝিনাইডাঙ্গা এলাকাতে বৃহস্পতিবার রাতে ঘটে যায় শুট আউটের ঘটনা। গুলিবিদ্ধ হন কোচবিহার ২নং পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তথা কোচবিহার ২নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাজু দে।
এই গুলি চালানোর ঘটনায় নাম জড়িয়েছে কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায়ের। তৃণমূলের অভিযোগ, বিধায়কের নির্দেশেই তার ছেলের নেতৃত্বে গুলি চালানো হয়। অভিযোগ, একটি কালো চার চাকার গাড়িতে এসে গুলি চালায় তারা। এই কালো গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুন্ডিবাড়ি থানার পুলিশ। গাড়িটি বিধায়কের বলে জানা গেছে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক।
বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে চকচকা গ্রাম পঞ্চায়েতের এই এলাকায় নিজের বাড়ির সামনেই গুলিবিদ্ধ হন এই তৃণমূল নেতা। গুলি লাগে তার ডান কাঁধে। এরপর তার অস্ত্রোপচার হয় কোচবিহারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। এখানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
জানা যায়, একদল দুষ্কৃতী চার চাকার কালো গাড়িতে চেপে এসে তার বাড়ির সামনেই তার ওপর গুলি চালায়। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কোচবিহার পুন্ডিবাড়ি থানার পুলিশ।
শুক্রবার কোচবিহার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে বেডে শুয়ে চিকিৎসাধীন তৃণমূল নেতা রাজু দে জানান, এই গুলির ঘটনায় যে গাড়িটি ব্যবহার হয়েছে তা কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায়ের। এর আগে এই গাড়ি নিয়েই এই চকচকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জনসংযোগ এসেছিলেন তিনি এবং এখানেই গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাকে। এই সময় জনগণের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনিও গিয়েছিলেন। মাসখানেক আগের এই বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে এভাবে তার ওপর গুলি ছোরা হয়েছে বলে এদিন দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন একজন বিধায়ক এবং তার ছেলে যেভাবে এ ধরনের ঘটনার সাথে যুক্ত তা অত্যন্ত লজ্জার।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিত দে ভৌমিক বলেন, পুলিশের তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে। যে গাড়িতে চেপে একমাস আগে জনসংযোগ করতে বেরিয়েছিলেন এই কোচবিহার উত্তর কেন্দ্রে বিজেপি বিধায়ক বৃহস্পতিবার রাতে সেই গাড়িতে চেপে এসেই গুলি চালাবেন বিধায়ক পুত্রসহ দুষ্কৃতীরা। এই দুষ্কৃতীদের বাইরে রাখা ঠিক হবে না, এদের পুলিশ অথবা জেল হেফাজতে থাকা উচিত। তিনি অভিযোগ করেন শীতলকুচি কিংবা ঢাংঢিংগুড়িতেও সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করেছিলেন এই বিজেপি বিধায়ক ও তার পুত্র যা অত্যন্ত নিন্দার বলে এদিন মতামত ব্যক্ত করেন তিনি।