কোচবিহারে রহস্যমৃত্যু ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর। এই মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে সোচ্চার হলো এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই। শুক্রবার কোচবিহার গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ডেপুটেশন কর্মসূচিতে সামিল হলো তারা।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার কোচবিহার গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্রী হোস্টেলে। এই ঘটনায় রীতিমতো ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কোচবিহার শহর সংলগ্ন হরিণচওড়া এলাকায় অবস্থিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হোস্টেলে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। মৃতার নাম অন্বেষা ঘোষ। তার বয়স ২০বছর। তিনি দুর্গাপুরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

জানা যায়, হোস্টেলে তার রুমমেটরা বুধবার নিজের বাড়িতে চলে যায়। হোস্টেলের এই ঘরে একাই ছিলেন অন্বেষা। তিনি এই হোস্টেলের অন্য ঘরে থাকা বান্ধবীদের জানিয়ে ছিলেন, রাতে তাদের সাথেই থাকবেন তিনি। কিন্তু রাত ১টা বেজে গেলেও অন্বেষা তাদের ঘরে না আসায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তার বান্ধবীরা। এরপর তারা অন্বেষার ঘরে গিয়ে দরজায় কড়া নাড়েন। কিন্তু তারা দেখতে পান দরজা ভেতর থেকে লক করা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাদের উদ্বিগ্নতা ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং তারা তড়িঘড়ি ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সবিতা গুহকে খবর দিয়ে ডেকে নিয়ে আসেন। তার উপস্থিতিতে ডাকাডাকি করেও অন্বেষার কোন সাড়া না পেয়ে দরজার লক ভেঙে তারা ভেতরে ঢুকে দেখতে পান ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে অন্বেষার দেহ। এই অবস্থায় অন্বেষাকে বাঁচানোর তাগিদে তড়িঘড়ি তারা দেহটিকে নামিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান কিন্তু এই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এরপর তারা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সোজা চলে আসেন কোচবিহার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। এখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা এই ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার পরেই শুক্রবার এই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সমবেত হন এসএফআই এবং ডি ওয়াই এফআই নেতা কর্মীরা একজন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে এদিন বিক্ষোভ দেখান তারা। এরপর তারা তাদের দাবিপত্র তুলে দেন এই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের হাতে।
এদিনের এই আন্দোলন কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন এসএফআই রাজ্য সভাপতি প্রণয় কার্যী সহ এসএফআই কোচবিহার জেলা সম্পাদক প্রাঞ্জল মিত্র, সভাপতি জিৎ কুমার পাল, ডিওয়াইএফআই জেলা সম্পাদক ইউসুফ আলি, সভাপতি মানস বর্মণ প্রমুখ।
এদিন এসএফআই রাজ্য সভাপতি প্রণয় কার্যী বলেন, র্যাগিং, থ্রেট কালচার সহ একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে এই রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে। রাজ্যের কলেজগুলিতে বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত এক্ষেত্রে কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো রকম নজরদারি চালাচ্ছে না। তাই এই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। কারণ এটা জানা প্রয়োজন, এই ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পেছনে কি কারণ রয়েছে? এর উত্তর সামনে না আসা পর্যন্ত আন্দোলনে থাকবে ছাত্র-যুবরা বলে এদিন জানান তিনি।