হাঁস নিয়ে রীতিমতো হাঁসফাঁস অবস্থা। পোষ্য হলেও বাড়ির লোকের কাছে কম আদরের নয়। অনটনের সংসারে পোষ্য হাঁসের অনাদর হয়নি কোনওদিন। আর শনিবার চল্লিশটি পোষ্য হাঁসের অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি মহিদুল মিঞা। প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে কৌশলে কিটনাশক খাইয়ে হাঁসেদের মেরে ফেলার অভিযোগে তুফানগঞ্জ থানায় দায়ের হয় লিখিত অভিযোগ।
তুফানগঞ্জ থানার অন্তর্গত জায়গীর চিলাখানা এলাকার এই ঘটনায় বেশ শোরগোল পড়েছে।
চিলাখানা -১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জায়গির চিড়িয়াখানার বাসিন্দা মহিদুল মিঞা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে বাড়িতে হাঁস প্রতিপালন শুরু করেছিলেন। পোষ্য হলেও তাঁর পরিবারের লোকজনের কাছে হাঁসের আদর যথেষ্ট। কষ্টের মধ্যেও পোষ্যের খাবারে কোনওদিন কার্পণ্য করেননি।

শনিবার মহিদুল পোষ্য হাঁসগুলিকে খাঁচা থেকে ছেড়ে দেন। দীর্ঘসময় এদিক- সেদিক ডাকাডাকি শুরু করেন। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। শেষে পোষ্য হাঁসের খোঁজ করতে বেরিয়ে স্তম্ভিত হয়ে যান তিনি। বাড়ি থেকে কিছুটা দুরে মহিদুলের নজরে আসে জমিতে পড়ে রয়েছে তাঁর চল্লিশটি প্রিয় পোষ্য। তড়িঘড়ি কয়েকটি হাঁসকে উদ্ধার করে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুক্ষণের সবকটি হাঁসের মৃত্যু হয়। মহিদুলের পূর্ব রাগ বসোতো জমিতে কীটনাশক দেওয়ার কারণে তাঁর হাঁসেদের মৃত্যু হয়েছে। প্রথমে মৃত হাঁসগুলি নিয়ে তিনি যান জমির মালিক কোব্বাত মিঞার কাছে। জমির মালিক বিষয়টিকে আমল দেননি।
কিন্তু পোষ্যেদের মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারেননি মহিদুল। কীভাবে মৃত্যু হল হাঁসের। সেই কারণ জানতে সাতপাঁচ না ভেবে সোজা হাজির হন তুফানগঞ্জ থানায়। পুলিশ কর্তারা মহিদুলের মুখ থেকে পুরো বিষয়টি ধৈর্যের সঙ্গে শোনেন।
মহিদুলের অভিযোগ, হাঁস প্রতিপালন করেই আমার সংসার চলে। হাঁসগুলি দিনভর এর-ওর বাড়ি ও মাঠে-ঘাটে ঘোরাঘুরি করে। সেই কৌশলে প্রতিবেশী কোব্বাত মিঞা তার জমিতেই কীটনাশক প্রয়োগ করে। কিন্তু সেই কথা কাউকেই সে জানায়নি। তাহলে অন্তত হাঁসগুলোকে বাঁচানো যেত। ডাকাডাকি করে হাঁসদের সাড়া না মেলায় জমিতে গিয়ে দেখি হাঁস পরে রয়েছে। সেই মৃত হাঁসদের নিয়ে আমি থানার দ্বারস্থ হয়েছি।
যদিও মহিদুলের অভিযোগ মানতে নারাজ কোব্বাতের স্ত্রী রাহেনা বিবি।
তিনি বলেন, কৌশলের কোনও বিষয় নেই। স্বামী গতকাল জমিতে কীটনাশক স্প্রে করেছিল ঠিকই। সেটা হাঁসদের ক্ষতির উদ্দেশ্যে নয়। তারপর কখন হাঁস জমিতে নেমেছে সেটা আমরাও লক্ষ্য করিনি এবং যার হাঁস সেও দেখেননি।