শনিবার বিজেপির বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ডা. সুকান্ত মজুমদার উত্তরবঙ্গ সফরের দ্বিতীয় দিনে জলপাইগুড়ি জেলায় এসে একাধিক বিষয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। ডা. সুকান্ত মজুমদার ময়নাগুড়ির অটল বিহারী বিজেপি পার্টি অফিসে পৌঁছলে সেখানকার বিজেপি কর্মীরা তাকে সংবর্ধনা জানান। এরপর তিনি জলপাইগুড়ি কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানান, প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি যোজনার অধীনে আজ সারা ভারতবর্ষের প্রায় ৯ কোটি কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০০০ টাকা করে সরাসরি পাঠানো হবে। এই প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৪৫ লক্ষ কৃষক সরাসরি এই সুবিধা পাবেন। তিনি জানান, আজকের দিনটি এই প্রকল্পের কুড়িতম কিস্তি হলেও পশ্চিমবঙ্গে এটি ১৮তম, কারণ রাজ্য সরকার প্রথমদিকে এই প্রকল্প গ্রহণ করতে রাজি ছিল না। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার প্রথম থেকেই এই প্রকল্প গ্রহণ করলে বাংলার কৃষকেরা আরও দুই কিস্তির অর্থ পেতেন।”

তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার কোনও উন্নয়নমূলক পরিকাঠামো তৈরি করতে আগ্রহী নয়। তিনি জানান, জলপাইগুড়ির কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রেই একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হবার কথা ছিল, কিন্তু এতদিনেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তার মতে, বর্তমান রাজ্য সরকার শুধুমাত্র দান-ধ্যান দিয়ে কোনওরকমে সরকার চালাচ্ছে। তাদের হাতে নেই পরিকাঠামো, নেই টাকা। তিনি আরো বলেন, “রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, বিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এগুলো বানালে আগামী ৫০ বছর ধরে মানুষ উপকৃত হবে। কিন্তু এই সরকার তা চায় না।” সাংসদ বলেন, রাজ্য সরকার ক্লাবগুলিকে যে অনুদান দিচ্ছে, তার মাধ্যমে তারা ভোট রাজনীতি করছে। “দুই লক্ষ টাকা দিলেও আমি খুশি হতাম। কিন্তু এই সরকার ভাবছে দুর্গাপুজোর নামে হিন্দু ভোট কিনে নেবে।” একইসাথে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাস—তাঁদের পাড়ার ক্লাব দুর্গাপুজোর জন্য ৮৫ হাজার টাকা পেত, অথচ তাঁদের নিজেদের বাড়ির সামনে খুন হতে হয়েছে। পুলিশ পৌঁছাতে সময় নিয়েছিল চার ঘণ্টা। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন, এটাই কি আপনার প্রশাসন?” সবশেষে তিনি বলেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার মানুষ ঠিক করে নিয়েছেন যে, মা দুর্গার নাম নিয়ে এই পাপের সরকারকে বাংলা থেকে বিদায় জানাবেন। তিনি জনগণের উদ্দেশে বার্তা দেন, “বাংলা পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত। কৃষকের অধিকার, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং স্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে বিজেপিই একমাত্র বিকল্প।”