এবার আসাম সরকারের এনআরসির নোটিশ পেলেন কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা ২নং ব্লকের লতাপাতা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা নিশিকান্ত দাস। তিনি প্রায় দুই মাস আগে এই নোটিশ হাতে পেলেও এবার তা এলো প্রকাশ্যে। এই ঘটনাকে ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এই লতাপাতা গ্রামে। নিশিকান্ত দাসকে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল-৪ কামরূপ, আসাম থেকে এনআরসির নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
জন্মসূত্রেই কোচবিহারের বাসিন্দা নিশিকান্ত দাস প্রায় ১০০বছর যাবত এই এলাকায় বসবাস করছে তাঁর পরিবার। তার বর্তমান বয়স ৭৫ বছর। তার বাবা দেবেন্দ্র চন্দ্র দাস দীর্ঘ প্রায় ৪৫ বছর আগে প্রয়াত হয়েছেন। আশ্চর্যজনকভাবে আসামের এনআরসির দপ্তর নিশিকান্ত বাবুর কাছে দাবি করছেন, যে ভোটার তালিকায় তার বাবার নাম নথিভুক্ত রয়েছে সংশ্লিষ্ট সেই ভোটার তালিকার প্রতিলিপি এনআরসি অফিসে জমা করবার জন্য। এই পরিস্থিতিতে এক চরম সংকটের মুখোমুখি তিনি।

নিশিকান্তবাবু জানান, কর্মসূত্রে তিনি আসামে ছিলেন বেশ কয়েক বছর। বাংলাদেশী ভেবে তাকে আটক করে আসাম পুলিশ। এরপর তার সমস্ত পরিচয় পত্র দেখে তাকে নির্দ্বিধায় ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরই সম্প্রতি এই নোটিশ আসে তার কাছে। এই নোটিশ পাওয়া মাত্রই তিনি যোগাযোগ করেন আইনজীবীর সাথে এবং এরপর নিজের বাড়ির দলিলসহ সমস্ত রকম নথি তিনি পেশ করেন আসামের এনআরসি দপ্তরে, কিন্তু এরপরও সন্তুষ্ট নয় এই দপ্তর। তাকে বলা হয় তার বাবার নাম যে ভোটার তালিকায় নাম ছিল, সংশ্লিষ্ট সেই ভোটার তালিকার প্রতিলিপি এনআরসি দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য। ৪৫বছর আগে প্রয়াত পিতার এই নথি সংগ্রহ করা যে কতটা দুঃসাধ্য, তা বুঝতে পেরে এই মুহূর্তে আতঙ্কে রয়েছেন নিশিকান্ত দাস। এব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্য চাইছেন তিনি।
নিশিকান্ত দাসের প্রতিবেশীরাও জানান, জন্মসূত্রে এখানের এই বাসিন্দা নিশিকান্ত দাস। হিসেবে তারা তার পাশে রয়েছেন বলে এদিন জানান।
শনিবার সকালে নিশিকান্ত দাসের বাড়িতে ছুটে যান তৃণমূল যুব নেতা কমলেশ অধিকারী। তিনি নিশিকান্ত দাসের সাথে সাক্ষাৎ করেন এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, বিজেপির এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে লড়াই জারি থাকবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পাশে রয়েছেন এই সমস্ত মানুষদের।
এরপর এই নিশিকান্ত দাসের সাথে দেখা করতে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। প্রাক্তন বনমন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মনকে সাথে নিয়ে তার বাড়িতে যান তিনি। আশ্বস্ত করেন নিশিকান্ত দাসকে। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, এই পরিবেশটা বিজেপি তৈরি করে দিতে চাইছে, ২০২৬সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যা একটা প্যানিক। যাতে বাঙালিরা সারেন্ডার করে বিজেপির কাছে, নিজেদের সেল্টার এর জন্য। এটা থেকেই বিজেপির শেষের শুরু হবে। এনআরসি বিজেপির কবরের কারণ হবে। বাংলার মানুষ কোন কাগজ দেবে না আসাম সরকারকে।