দুর্বিষহ জীবন কাটে কুঁড়ে ঘরে, বাংলার আবাস যোজনার ঘর মেলেনি। একটি জরাজীর্ণ কুঁড়ে ঘরে মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েকে নিয়ে থাকেন ফালাকাটা ব্লকের দেওগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ দেওগাঁয়ের প্রায় ৬৫ বছর বয়সের অসহায় আমিনা বেগম। প্রায় ৩৫ বছর হলো স্বামী গত হয়েছেন । প্রায় বছর পঁচিশেক আগের বাম আমলের পাওয়া সরকারি কুঁড়ে ঘরটির অবস্থা এতটাই বেহাল হয়ে পড়েছে যে সেটা এখন বসবাসের অযোগ্য। দেখে মনে হয় যেন বহুদিনের একটি পরিত্যাক্ত ঘর।

বৃষ্টি হলেই ঘর দিয়ে অঝোরে জল পরে । বিধবা আমিনা বেগম ঘরের ভিতরে একটি ত্রিপল টাঙিয়ে কোনো রকমে রাত কাটান। নিরুপায় আমিনা মাটিকেই বিছানা বানিয়ে শুয়ে পড়েন। ঘরে রাতে ঘুমানোর মতো একটি বিছানাও নেই । একটি রান্না ঘর আছে, সেটিও জরাজীর্ণ। রোজগার বলতে কিছুই নেই। মাসের রেশন সামগ্রী এবং পাড়া প্রতিবেশীরা মাঝেমধ্যে যা দেয় সেটুকু দিয়ে পেট চলে। মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েকে নিয়েই বাস করেন তিনি। বছর পাঁচেক আগে স্ট্রোক করায় চলাফেরাও করতে পারেননা তিনি। বাংলা আবাস যোজনার একটি ঘর জোটেনি অসহায় বিধবা মহিলার কপালে। অথচ এলাকায় বহু সচল ব্যক্তি ঘর পেয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে কিভাবে একটি ভগ্নদশা কুড়ে ঘরে দিন কাটাচ্ছেন অসহায় আমিনা বেগম, তার খোঁজ হয়তো নেই প্রশাসনের কাছে। বাংলা আবাস যোজনায় বহু সচল ব্যক্তি ঘর পেলেও কেনো তিনি বঞ্চিত রয়ে গেলেন, সেই প্রশ্নের উত্তরও আজ অজানা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ” পাকা ঘর থাকার পরও অনেকে আবাস যোজনার ঘর পেয়েছেন, কিন্তু প্রকৃত প্রাপকেরা আজ বঞ্চিত। আবাস যোজনার ঘর নেতাদের জন্য,গরিব অসহায়দের জন্য নয়।”
অসহায় আমিনা বেগম বলেন,” সিপিএমের আমলে একটি ঘর পেয়েছি, তারপর আর কিছুই পাইনি।কেউ মুখ তুলে তাকায় না আমার দিকে।”
দেওগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য ফজলুল হক বলেন,” বিষয়টি বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছি। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।
দেওগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শেরিনা খাতুন বলেন,”বর্তমানে যে সমস্ত উপভোক্তা ঘর পাচ্ছেন তাদের তালিকা পূর্বতন পঞ্চায়েত বোর্ডের সময়কার। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।ওনাকে আবাস যোজনার ঘর দেওয়ার সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
আমিনা বেগম আদৌ কি আবাস যোজনার ঘর পাবেন, নাকি বাকি জীবন টুকু এই জরাজীর্ণ কুঁড়ে ঘরে কাটাতে হবে তাঁকে । সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে এলাকায়।