DIGITAL BANGLA NEWS

আপনার এলাকার খবর

আলিপুরদুয়ারের দীপেন্দ্রর স্মৃতিতে জুবিন গর্গ

জুবিন গার্গ — এক নাম, এক প্রেরণা, এক যুগের সুরের প্রতিনিধি।
তাঁর সংগীত জীবনে প্রভাবিত হয়ে উঠে এসেছে বহু প্রতিভা। তেমনই একজন আলিপুরদুয়ার জেলার শিল্পী দীপেন্দ্র লাহিড়ী , যাঁর গানের শুরু থেকে সফলতার গল্পের মূল সুর জুবিন গার্গ। শিল্পীর অনন্ত প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন দীপেন্দ্র । মনে পড়ছে একের পর এক স্মৃতি, আর বুকে বাজছে একটাই কথা — “তিনি যুগশ্রেষ্ঠ। তিনি জীবন। তিনি জুবিন।”
বর্তমানে কলকাতায় থেকে গান কেই সে পেশা ও ভালোবাসা হিসেবে নিয়ে এগিয়ে চলেছে । পশ্চিমবঙ্গ থেকে অসম বিভিন্ন মঞ্চ থেকে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে জুবিনের গান গেয়ে শ্রোতাদের ভালোবাসা পেয়েছেন দীপেন্দ্র ।
সংস্কৃতিক আবহেই বড় হয়ে ওঠা দীপেন্দ্রর ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি গভীর টান। মা দীপালি বাগচী একজন গানের শিক্ষিকা, বাবা শান্তনু লাহিড়ী ছিলেন সাংবাদিক — ফলে ঘরেই তৈরি হয় সংগীত-ভালবাসার ভিত্তি। ছোট থেকেই জুবিন গার্গের গান তাঁকে মোহিত করত। বাড়ির দেওয়ালে টাঙানো জুবিনের ছবি দেখে বড় হয়েছেন দীপেন্দ্র, আর তাঁর গানের মধ্যেই খুঁজে পেয়েছেন জীবনের মানে।
দীপেন্দ্র জানান, “প্রথম গানের অনুপ্রেরণা জুবিন দাদার গান থেকেই পাই। তাঁর সুর, কথা আর গলার আবেগ আমাকে নাড়িয়ে দিত।”


২০১৮ সালের জুলাই মাসে, দীপেন্দ্র নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলে প্রথম ভিডিও হিসেবে জুবিন গার্গের জনপ্রিয় গান ‘মায়াবিনী’-এর বাংলা ও অসমীয়া ভার্সন আপলোড করেন। গানটি খুব দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষত আসামে। আর ঠিক সেপ্টেম্বরের শুরুতেই, সেই গান পৌঁছে যায় জুবিন গার্গের কানে।
এখানেই ঘটে সেই স্বপ্ন পূরণের ঘটনা —
জুবিন গার্গ নিজেই ফোন করে দীপেন্দ্রর প্রশংসা করেন, এবং পরবর্তী গানের কাজে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সেই সূত্রে জুবিন কলকাতায় এসে হাইল্যান্ড পার্কে একটি অনুষ্ঠানে দীপেন্দ্রকে নিয়ে স্টেজে ‘মায়াবিনী’ গানটি পরিবেশন করেন। সেই দিনটি ছিল দীপেন্দ্রর জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত।
এরপর বহুবার কলকাতার বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও রেকর্ডিংয়ে দীপেন্দ্র ছিলেন জুবিনের সঙ্গী। একসাথে কাটানো অসংখ্য স্মৃতি আজ তাঁকে কাঁদাচ্ছে। দীপেন্দ্র বলছেন, “আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না যে, তিনি আর নেই। উনি তো ছিলেন এক মহাত্মা।”
শুধু মঞ্চ নয়, বহুবার জুবিন গার্গ তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় দীপেন্দ্রর গান শেয়ার করেছেন এবং তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছেন। নতুনদের প্রতি তাঁর সহানুভূতি, শিল্পীর হৃদয়ে স্থান দেওয়ার মানসিকতা তাঁকে সাধারণের থেকে আলাদা করেছে। দীপেন্দ্র বলেন, “জুবিনদা সবসময় নতুনদের অনুভূতি বুঝতেন, উৎসাহ দিতেন, সুযোগ করে দিতেন। উনি ছিলেন এক দর্শনের মানুষ।”
তাঁর প্রয়াণে গোটা দেশ যেন একসঙ্গে গাইছে তাঁর গান —
এক সুরে, এক হৃদয়ে।
জাত, পাত, ভাষা, বর্ণ — সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে তিনি হয়ে উঠেছেন ভালোবাসার প্রতীক।

শেয়ার করুন...

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Live TV

play-sharp-fill

নতুন খবর আবার পড়ুন

রাজ্যে আইনের শাসন নেই, গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকারকে বিদায় দেবে বিজেপি, শিলিগুড়িতে বললেন শমীক ভট্টাচার্য

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্য সরকারকে কড়া আক্রমণ

Read More »